বৃষ্টি, কারো কাছে খুবই পছন্দের আর কারো কাছে নিতান্তই বিরক্তি কর। এটা সাধারণত মানুষের ভালো লাগা, রুচি অথবা পারচেপশনের উপর নির্ভর করে। হুট করে প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হলে অধিকাংশ মানুষ কি করে?স্বভাবেই অনেকেই বৃষ্টির হাত থেকে বাচার জন্য চেষ্টা করে। কারো কারো আবার মুখে উঠে বিরক্তির ছাপ!
আচ্ছা, বৃষ্টি এলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি করতেন? তিনি কি পালিয়ে যেতেন? না, ঘুমিয়ে থাকতেন? আসলে, তিনি কিন্তু মোটেও পালিয়ে বা ঘুমিয়ে থাকতেন না; বরং তিনি খুশি হতেন। খুব সাবধানতার সাথে তিনি তার পবিত্র দেহের কিছু অংশ উন্মুক্ত করে বৃষ্টির পরশ বুলাতেন।
আনাস রাঃ বলেন,”আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে থাকাকালে একবার বৃষ্টি নামল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাঁর কাপড়ের কিয়দংশ উন্মোচন করলেন যেন শরীরে বৃষ্টির পানির স্পর্শ লাগে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কেন এমন করলেন? তিনি বললেন, কারণ তা(বৃষ্টি) তার মহান রবের কাছ থেকে মাত্রই এসেছে”। [সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৮৯৮]
ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ এ হাদিসের ব্যাপারে বলেন,”এই হাদিসটি তাদের জন্য দলিল যারা বলে, বৃষ্টির শুরুতে নিজের সতর ছাড়া শরীরের অন্য কোনো অংশ উন্মুক্ত করতে বলা হয়েছে।যাতে করে শরীর বৃষ্টির পরশ বুলানো যায়”।
ইমাম কুরতুবি রাহিমাহুল্লাহ এই হাদিস সম্পর্কে মন্তব্য করেন,”আমাদের নবী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টির বারাকাহ পেতে এমনটা করতেন। কারন,আল্লাহ তায়ালা বৃষ্টিকে রহমত, মনোরম এবং সংশোধক বলে বর্ণনা করেছেন। এটি জীবন আনয়ন কারী। আযাব দূরকারী। এই হাদিস আমাদের আরও শেখায় যে, প্রত্যেকেরই এই বষর্ণকে সম্মান করা উচিত এবং এর সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত ।
সাহাবীরা এই সুন্নাহ অনুসরনে খুবই আগ্রহী ছিলেন। উসমান রাদিআল্লাহু আনহু বৃষ্টির শুরুতে নিজেকে উন্মুক্ত করতেন। আব্বাস ও আলী (রাঃ) একি কাজ করতেন।
তাছাড়া রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টি শুরু হলে দুয়া করতেন, “হে আল্লাহ, মুষলধারে উপকারী বৃষ্টি বষর্ণ করুন”। (সহিহ বুখারী,হাদিস-১০৩২)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ” এই দুইটা দুয়া প্রত্যাখান করা হয় না।আযানের সময় দুয়া আর বৃষ্টির সময়ে দুয়া”।(সুনানে আবু দাউদ,হাদিস-২৫৪০)